নিশ সাইট শুরু করতে যাচ্ছেন? এই ৭টি ব্যাপার মাথায় রাখুন!

যারা একেবারে শুরু থেকে একটি নিশ সাইট শুরু করতে যাচ্ছেন তাদের জন্য আমার এই লেখাটি। আশা করি ভুল কিছু হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টি তে দেখবেন।

যে উদ্দেশ্যে এই লেখাটি লিখতে ইচ্ছা করলো তা হলো, আমরা যারা নিশ সাইট নিয়ে আগে কাজ করি নি, এবং একেবারে নতুন ভাবে শুরু করতে যাচ্ছি তারা অনেক কিছুই হিসাবে গোলমাল পাকিয়ে ফেলি। কেউ হয়তো জিজ্ঞাসা করতে পারেন, আমি কিভাবে জানি। কারণ, আমিও প্রথম সাইট শুরু করতে গিয়ে অনেক কিছুই গোলমাল পাকিয়ে ফেলেছিলাম।

ফলাফল?

নিশ সাইট ব্যবস্থাপনায় হযবরল অবস্থা আর অহেতুক টাকা খরচ।

নিশ সাইট নিয়ে কাজ করা এমন একটি বিষয় যে, কোন একটি বিষয়ে ভুল সিদ্ধান্ত আপনাকে অনেক দিক দিয়ে ভুগাবে। হতে পারে সেটা আপনার সময়, আপনার পরিশ্রম অথবা টাকা পয়সা।

যে বিষয় গুলো শুরু করার আগে মাথায় রাখতে হবে সে বিষয়ে কিছু পয়েন্ট আমি উল্লেখ করছি।

১। হুট হাট করে নেমে পড়বেন না

যদি মনে করেন আজকেই একটি সাক্সেস স্টোরি দেখে আজকে থেকেই নেমে পড়বেন তাহলে বুঝতে হবে ভুল করছেন। সবাই শুধু সাক্সেস টাই ফলাও করে দেখাতে পছন্দ করে। কিন্তু ভিতরের কাহিনি খুব কম মানুষ সত্যিকার অর্থে জানাতে চায়। যে বলছে তার সাইট ৩ মাসে অনেক কামিয়ে ফেলছে তার মানে এই না যে সে ওই ৩ মাসই কাজ করেছে। তার আগে সে খুব ভালো একটা সময় সে পড়াশুনার পাশাপাশি রিসার্চ করেছে ভালো করে। এই পড়াশুনা আর রিসার্চ টা করতে ভুলবেন না।

Admin – একটা উদাহরণ দেই – ধরুন আপনি কলার ব্যবসা করবেন, এতে লাভ অনেক বেশি। কিন্তু আপনি আসলে আম নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে পছন্দ করেন। আম খেতে ভালোবাসেন। আম নিয়ে গল্প করতে ভালোবাসেন বন্ধুদের সাথে। কিন্তু শুধুমাত্র কলায় লাভ বেশি বলে আপনি কলা নিয়ে ব্যাবসা করতে নেমে গেলেন। এতে করে আপনি ধরা খাবেন। যেই জিনিস নিয়ে আপনি অনলাইনে রিসার্স করতে ভালো লাগবে বলে আপনি মনে করেন এমন টপিক/নিস নিয়ে অ্যামাজন এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করবেন। দরকার হলে কয়েকমাস সময় এই রিসার্চ করে কাটিয়ে দিন। মন মতো টপিক পেলেই তবে শুরু করুন নিজের সাইট। 

২। প্রয়োজনীয় বাজেট এর চেয়ে একটু বেশি বাজেট করুন

যে কোন ব্যবসা শুরু করার আগে কিন্তু মানুষের মন অনেক ভুল প্রেডিক্ট করে। যেমন ১০ টাকা ইনভেস্ট করলে শিউর ১৫ টাকা আসবে। অনেক টাকা লাভ হবে, এই হবে সেই হবে। কিন্তু সত্যিকার অর্থে যারা শুরু করেছে তারাই বুঝে যে যত খানি সহজলভ্য মনে হয়েছিল ততখানি আসলে না। তার চেয়ে অনেক বেশি টাকাই দরকার পড়ে যায়। আনুষঙ্গিক অনেক খরচ তখন মাথায় এসে পড়ে। তাই শুরু থেকেই কিছু টাকা বেশি হাতে রেখে শুরু করবেন। কারণ, আপনার প্রতিযোগীরা নিশ্চয়ই এর মধ্যে আরও অনেক পদ্ধতি অনুসরণ করবে যেটা আপনাকে টেক্কা দিতে হবে। না হলে পুরা ইনভেস্ট একসাথে বৃথা যাবে।

৩। ডোমেইন টা যেন একটু ব্র্যান্ড্যাবল হয়

মানে হলো, একটা সময়ে ইএমডি ডোমেইন খুব ভালো কাজে দিয়েছে। হয়তো এখনো অনেকে সুবিধা পাচ্ছেন। তবে, প্রতিযোগিতা অনেক পরিমাণে বেড়ে যাওয়াতে ইএমডি নিয়ে খুব বেশি এগিয়ে যাওয়া টা এবং খুব ভালো পরিমাণে সুবিধা পাওয়া টা কষ্টকর হয়ে যাবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এমন অবস্থা হবে যে, আরও কিছু কন্টেন্ট হয়তো দিতে পারলে আপনার সাইট আরও একটু ভালো অবস্থানে যেতে পারবে। কিন্তু ইএমডি হবার কারণে, কনটেন্ট দেয়ার কোন অপশন হয়তো থাকবে না। একটু ব্র্যান্ড্যাবল হলে কিন্তু সে অপশন টি খোলাই থাকলো।

৪/ টার্গেট ভিসিটর ও কীওয়ার্ড সিলেকশন :

নিস সাইট এ আপনার আগে নির্ধারণ করতে হবে কোন নির্দিষ্ট দেশের ভিসিটর আপনি টার্গেট করছেন কি না ? যদি তা হয় তাহলে আপনি আগে ওই দেশের ভিসিটরদের চাহিদা অনুযায়ী কীওয়ার্ড সিলেক্ট করে নেন। তারপরে ওই কীওয়ার্ড দিয়ে ক্যাটাগরি অনুযায়ী আর্টিকেল লিখেন। ভাবছেন আর্টিকেল কেমন লিখা জরুরি ? আর্টিকেল অবশ্যই পাঠকদের চাহিদা পূরণীয় হতে হবে আর এস ই ও ফ্রেন্ডলি তো অবশ্যই। আরো একটা জিনিস লক্ষনীয় আপনার আর্টিকেল লেন্থ যাতে কম্পেটিটর থেকে বেশি হয় ও প্রোডাক্ট ফোকাস হয় সাথে এর সুবিধা ও অসুবিধা ও বটে।

  এসইও করানো :

এই পর্যায়ে এসে আপনি কনটেন্ট লিখিয়েছেন পাবলিশড ও করেছেন। এখন বাকি এর ভিসিটর আসবে আর আপনার লিংক ধরে প্রোডাক্ট ক্রয় করবে। এখন যদি আপনি
আপনার টার্গেটেড কাস্টমার না পান তাহলে সত্যি সমস্যা বা আপনার কীওয়ার্ড যদি রাঙ্ক না করে তবেও সমস্যা তাই তখন আপনাকে ব্যাকলিংক এর সহায়তা নিতে হবে। এই ক্ষেত্রে আপনি যদি নিজে ব্যাকলিংক করতে পারেন তবে খুবই ভালো কারণ আপনার অর্থ বেঁচে যাবে অনেক কিন্তু তা না পারলে আপনাকে ফ্রীলান্সারদেড় দিয়ে করিয়ে নিতে হবে। তাই আপনাকে বাজেট রাখার কথা আগেই বলেছিলাম।
মনে রাখবেন নিস সাইট এর জন্য কীওয়ার্ড রিসার্চ, কনটেন্ট এই দুটাই অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

৬। ধৈর্য, ধৈর্য এবং ধৈর্য

একটি নিশ সাইট থেকে আপনার কষ্টের ফলাফল আসতে সময় লাগবে অন্তত ৪-৮ মাস। তাই, সে হিসাব করে যথেষ্ট পরিমাণে প্ল্যান করে তারপর কোন সিদ্ধান্ত নিবেন। যদি সাইট শুরু করার সাথে সাথেই ধরে বসে থাকেন যে ভিজিটর আসবে আর আপনি কমিশন পাওয়া শুরু করবেন তাহলে ভুল করবেন। যতখানি ধৈর্য দরকার হবে ভাবছেন তার চেয়ে বেশি লাগবে কিন্তু।

Never Stop Learning Niche Site
  • Save

৭। শেখার মানসিকতা থাকতে হবে

একটি নিশ সাইট এর পিছনে অনেক গুলো বিষয় জড়িত থাকে। প্রতিটা স্টেপেই কিন্তু শিখার আছে অনেক কিছু। ধুপ ধাপ একটি স্টেপ থেকে আরেকটি স্টেপ যেন জাম্প না করি। তাহলে সবকিছু আসলে মুখস্থই করা হবে। ভবিষ্যৎ? আপনাকে প্রতিটা ধাপেই কারো না কারোর সাহায্য লাগবেই। পাশাপাশি আপনার নলেজ ডেভেলপ করবে না। আর পর্যাপ্ত নলেজ ছাড়া টিকে থাকা টা কষ্টকর। এটা যে কোন সেক্টর ও যেকোনো কাজের জন্য়ই সত্য।

উপরের বিষয় গুলো হয়তো কারো কাজে লাগতে পারে। কারোর ভালো লেগে থাকলে জানালে কৃতজ্ঞ থাকবো। আমারও ভুল হতে পারে। তবে আমি শুরু করার সময় যে বিষয় গুলো নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছিলাম তাই শেয়ার করলাম। আশা করি কারোর না কারো কাজে লাগবে।

Ismail Hossain
আপনার ইমেইলে বাংলায় ইন্টারনেট মার্কেটিং এবং এসইও রিলেটেড লেটেস্ট খবর ও আপডেট পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করে রাখুন।

1 thought on “নিশ সাইট শুরু করতে যাচ্ছেন? এই ৭টি ব্যাপার মাথায় রাখুন!”

Leave a Comment

Share via
Copy link
Powered by Social Snap