আরাম এবং সফলতা | কোন স্টেজে আছেন আপনি?

কমফোর্ট জোনঃ আমরা বাংলাদেশিরা বেশ আরামপ্রিয়। নতুন কিছু চিন্তা করতে ভয় পাই। নতুন কিছু এক্সপেরিমেন্ট করতে ভয় পাই। মাসে লাখখানেক টাকা আসলেই ভাবি – ভালোই তো চলছে। এভাবেই চলুক।

ফিয়ার জোনঃ এই সময় বা প্রেক্ষাপটটা কমফোর্ট জোনের সাথে সরাসরি সম্পর্কিত। যারাই কমফোর্ট জোনে থাকে, তারাই একই সাথে ফিয়ার জোনে থাকে। কারণ নতুন কিছু করতে হলে কনফিডেন্সের দরকার হয়। একটু বেশি সাহসের দরকার হয়। কিন্তু নিজের আরাম আয়েস একটু ত্যাগ করতে হবে বিধায়, আমরা সেই রিস্ক নিতে চাই না। বিভিন্ন অজুহাত খুঁজি। কেউ একজন বলল – “এই কিওয়ার্ড তুমি র‍্যাঙ্ক করাতে পারবা না।” আর ওমনি, আপনি চিন্তা ভাবে না করে, পর্যাপ্ত রিসার্স না করে সব কিছু বাদ দিয়ে বসে থাকলেন। এমনিতে যা আসতেছে প্রতি মাসে, খারাপ তো না, নতুন কিছু যদি কাজ না করে? মানে ভয়ে ভয়ে থেকে যা আছে তাই নিয়ে সন্তুষ্ট থাকা।

লার্নিং জোনঃ এই স্টেজে যারা থাকে, আমার মতে এদের সংখ্যাও নেহাত কম না। তারা নতুন নতুন সমস্যা নিয়ে চিন্তা করে এবং সেগুলো কিভাবে সমাধান করা যায় সেটা নিয়ে ভাবে। ধরুন কেউ একজন একটা ওয়েবসাইট বানালো।হয়তো প্রতি মাসে তার কিছু ইনকামও হয় (অ্যাডসেন্স অথবা এফিলিয়েশন করে) কিন্তু তার ডিজাইন তেমন প্রফেশনাল হয় নাই। সুতরাং সে কিভাবে আরও সুন্দর করা যায় তার সাইটকে সেটা নিয়ে সে ভাবে, অনলাইনের বিভিন্ন সোর্স থেকে শিখতে চেষ্টা করে, বিভিন্ন গ্রুপে গিয়ে প্রশ্ন করে। তার মানে সে তার বর্তমান অবস্থা নিয়ে হ্যাপি না। আমি মনে করি, এই স্টেজে যারা থাকে, সফল হওয়ার সম্ভাবনা তাদের সবচেয়ে বেশি।

স্টিভ জবসের সেই বিখ্যাত কোটসটা তো আমরা সবাই জানি – Stay Hungry, Stay Foolish. আপনি এখন যা জানেন, তার চেয়ে বেশি কিছু জানার যেই ক্ষুধা, আকাঙ্ক্ষা – সেটাই আপনাকে অনেক দুর নিয়ে যেতে পারে।

গ্রোথ জোনঃ – কিছুদিন আগে আমাকে একজন প্রশ্ন করলেন – “ভাই, আমারতো এখন প্রতি মাসে ২৫০ ডলার ইনকাম হচ্ছে। আমার নেক্সট টার্গেট আগামী ৬ মাসের মধ্যে ৫০০ ডলার ইনকাম করা।’ আমি তাকে বললাম – ভাই, আপনি ৬ মাস পর প্রতি মাসে ৫০০০ ডলার ইনকাম করবেন, সেইটার প্লান করেন এবং সে অনুযায়ী কাজ করেন। তার ২ মাস পর সে আমাকে আপডেট জানালো, সে অলরেডি ১০০০+ ইনকাম করছে।

আমরা আসলে আমাদের চিন্তার মধ্য দিয়েই নিজেকে এবং নিজের সামর্থ্যকে সীমিত ও ছোট করে ফেলি। আপনি আগেই চিন্তা করে বসে থাকেন যে আপনার দ্বারা ৫০০০ ডলার ইনকাম করা সম্ভব না, বড়জোর ৫০০ ডলার করতে পারবেন। এবং ঠিক এভাবেই নিজের সর্বোচ্চ সামর্থ্যকে কাজে লাগানো থেকে দূরে থাকি আমরা। এখানেই আমাদের সাথে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মানুষের পার্থক্য। যে প্রতি মাসে কখনোই ৫০০০ ডলারের স্বপ্ন দেখতে পারে না, সে কিভাবে ওই টাকাটা আর্ন করবে?

কারণ, আপনি যদি ৫০০০ ডলার ইনকামের স্বপ্ন দেখেন, তাহলে সাথে সাথে এটাও চিন্তা করবেন যে –

  • ৫০০০ ডলার ইনকাম করতে হলে আপনার ওয়েবসাইটে কতো ভিজিটর থাকা দরকার প্রতি মাসে?
  • ওই পরিমাণ ভিজিটর আনতে হলে আপনার টোটাল কতগুলো কন্টেন্ট পাবলিশ করা উচিত?
  • আপনার টোটাল কন্টেন্টের মধ্য থেকে যদি ৫০% কন্টেন্টও র‍্যাঙ্ক করাতে চান, তাহলে কতগুলো লিঙ্ক করা প্রয়োজন?
  • ওই পরিমাণ লিঙ্ক করার জন্যে এবং কন্টেন্ট লেখার জন্যে কত টাকা ইনভেস্ট করা উচিত?

দেখুন, আপনি যখনি ৫০০০ ডলারের স্বপ্ন দেখে ফেলবেন, সাথে সাথে আপনার অবচেতন মন সেই টাকাটা আর্ন করার জন্যে যা যা করা দরকার সব কিছুর জন্যে অটো প্রস্তুত করে ফেলবে আপনাকে এবং আপনার মনকে।

আমরা যে কথায় কথায় শুনি – “Think Big & Dream Big”. আমি উপরে সত্যিকারের যে উদাহরণ দিলাম, সেটাই এই Dream Big এর বাস্তব এবং অবশ্যম্ভাবী রূপ।

সুতরাং মূলকথা হচ্ছে –

  • আপনি যদি কমফোর্ট জোন এবং ফিয়ার জোনে থাকেন, যত দ্রুত সম্ভব লার্নিং জোনে চলে আসুন।
  • যদি লার্নিং জোনে থাকেন, তাহলে নিজের গ্রোথ নিয়ে চিন্তা করুন।
  • একটা নির্দিষ্ট কিন্তু বেশ বড় একটা লক্ষ্য স্থির করুন। তারপর চিন্তা করুন কিভাবে এবং কি কি করলে সেই লক্ষ্যে পৌঁছানো যাবে।
  • সেগুলো করার জন্যে যা যা বাদ দেয়া দরকার সব বাদ দিয়ে কাজে নেমে পড়ুন।

সাফল্য আসবেই।

নাসির উদ্দিন শামীম
আপনার ইমেইলে বাংলায় ইন্টারনেট মার্কেটিং এবং এসইও রিলেটেড লেটেস্ট খবর ও আপডেট পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করে রাখুন।

1 thought on “আরাম এবং সফলতা | কোন স্টেজে আছেন আপনি?”

  1. অনেক ভাল লাগে ভাই আপনার কথাগুলো। অনেক অনুপ্রেরণা পাই আপনার কাছে। পাশে থাকবেন ভাই।

    Reply

Leave a Comment

Share via
Copy link
Powered by Social Snap