৯ টি গুগল র‍্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর যেগুলো সম্পর্কে আপনার অবশ্যই জানা উচিত!

গুগল প্রতিদিনই তাদের সার্চ এলগোরিদম আপডেট করে। এগুলো মাইনর চেঞ্জ। কিন্তু বড় ধরনের কিছু এলগোরিদম আছে যেগুলোর ব্যাসিক মোটামোটি একি থাকে সবসময়। কিন্তু মাঝে মাঝে হয়তো ট্যেকনিক্যালি তাদের Artificial Intelligence প্রতিদিনই শিখে এবং অটো অপ্টিমাইজড হয় একদম কোর এলগোগুলি।

SEMrush এই ধরনের সব এলগো এবং ৬ লক্ষের বেশি কিওয়ার্ড এবং প্রথম ১০০ পেজে থাকা গুগল রেজাল্টগুলি এনালাইসিস করে খুঁজে বের করেছে, কোন কোন ফ্যাক্টরসগুলো বেশ ভালো কাজ করে এবং কোন গুলো একদমই কাজ করে না ইদানীং।

আজকের পোস্টে সেগুলোই জেনে নেয়ার চেষ্টা করবো এক এক করে।

  • Save
SEMRush.com থেকে নেয়া ইমেজ।

Direct Website Visits

আমরা যদি ইউটিউব দেখতে চাই তাহলে প্রথমে গুগলে ইউটিউব খুঁজি না। আমরা যেটা করি গুগল ক্রোম অথবা ফায়ারফক্স ব্রাউজারে সরাসরি youtube.com লিখি এবং ইউটিউবে যাই।  ইউটিউবের পাশাপাশি ফেসবুক, টুইটার, সংবাদপত্রের জন্যে prothomalo.com অথবা উইকিপেডিয়া এর কথা মাথায় আসলে ব্রাউজারে সরাসরি wikipedia.org তে যাই। আবার নিস স্পেসিফিক সাইটের কথা চিন্তা করলে, আমরা যদি ব্যাক্লিঙ্ক অথবা কিওয়ার্ড ডাটা দেখতে চাই, তাহলে সরাসরি ব্রাউজার থেকে ahrefs.com এ যাই। কিন্তু গুগলে প্রথমে ahrefs সার্চ করে দেন ওই সাইটে যাই না। মানে আমাদের প্রয়োজনীয় সাইটগুলোর এড্রেস আমাদের মুখস্থ এবং সরাসরি টাইপ করে ওইসব সাইটে ভিজিট করি। এটাই Direct Website Visits।

গুগল জানে যে, একটা ওয়েবসাইটের এড্রেস যখন মানুষ মনে রাখে, তখন ওই ওয়েবসাইটটা আসলেই প্রয়োজনীয় এবং কন্টেন্ট এবং ফিচার নিশ্চয়ই অনেক ভালো। এই ব্যাসিক জিনিসটা মাথায় রেখেই গুগল Direct Website Visits হয় এমন সাইটকে সবচেয়ে ভালো র‍্যাঙ্ক দেয়।

টিপসঃ আপনি যদি আপনার সাইটকে এমন বানাতে পারেন; তবে আপনাকে গুগলের কাছে যেতে হবে না। বরং, গুগলই আপনার কাছে ছুটে আসবে। কিভাবে আপনার নিসে পৃথিবীর টপ ২০টা সাইটের মধ্যে আপনার সাইটকে অন্যতম একটা বানানো যায়? চিন্তা করুন!

Time On Site

গুগল আসলে একটা ওয়েবসাইট ভিজিটর এসে কতক্ষণ থাকে সেটার উপর ডিপেন্ড করে বোঝার চেষ্টা করে একটা ওয়েব সাইটের কনটেন্ট কত ভালো । আপনি যদি আপনার কথা চিন্তা করেন, আপনি একটা ওয়েবসাইটে গিয়ে যদি দেখেন যে ওই সাইটের কোন কিছুই আপনার ভালো লাগছে না আপনি কিন্তু সাথে সাথে বের হয়ে যাবেন।  কিন্তু আপনি যদি ওই সাইটের আর্টিকেলগুলা পড়ে মজা পান তাহলে অনেকক্ষণ থাকবেন এবং অনেকগুলা সিমিলার আর্টিকেলস দেখবেন। গুগল এই ব্যাসিক জিনিসটাই কাজে লাগায়। যে ওয়েবসাইটগুলোতে মানুষের সবচেয়ে বেশি সময় ধরে থাকে তারা ওই সাইটগুলুকে ভালো র‍্যাঙ্কে নিয়ে আসে। কারণ ওদের AI অটোম্যাটিক্যালি একজন ভিজিটর কেনো বেশিক্ষণ থাকছে সেটা বুঝতে পারে এবং সে অনুযায়ী ওয়েবসাইটের র‍্যাঙ্ক আপডেট করে।

টিপসঃ কিভাবে আপনার সাইটে Time on Site রেশিও বাড়ানো যায়? পোস্টটা গ্রাফিক্যালি সুন্দর করুন। সুন্দর সুন্দর ইমেজ ইউজ করুন। আর্টিকেলের মধ্যে ভিডিও দেন, রিলেটেড পিডিএফ এম্বেড করেন। সুন্দর ফন্ট ইউজ করেন সাইটে।

Pages Per Session

ধরুন আমি আপনার ওয়েবসাইটে গেলাম গুগলে কোন কিছু সার্চ করে। আপনার সাইটে গিয়ে আমি ১০ মিনিট থাকলাম। ৫টা পেজ দেখলাম। তারপর বের হয়ে গেলাম। এখানে আমার Session হয়েছে ১টি, Pages Per Session হয়েছে ৫টি। এরপর, ২ ঘণ্টা পর আবার আপনার সাইটে গেলাম এবং আরও ৩ টি পেজ দেখলাম। তাহলে আমার মোট সেশন হয়েছে ২টা আর Pages Per Session হয়েছে ৮টা। সিম্পল। তারমানে, আমি একটা সাইটে একবার ঢুকে ঠিক কয়টা পেজ দেখি অথবা কয়টা আর্টিকেল পড়ি, গুগলের কাছে তার একটা বিশাল গুরুত্ব আছে।

টিপসঃ  কিভাবে বাড়াবেন Pages Per Session? একটা আর্টিকেল থেকে আরেকটা আর্টিকেলে প্রচুর Intarnal Links করেন। এই লিঙ্কটা করবেন Pages Per Session বাড়ানোর জন্যে। র‍্যাঙ্কিং এর কথা মাথায় রেখে না। পোস্টের শেষে “Posts You May Also Like” দিয়ে আরও কয়েকটা রিলিভেন্ট আর্টিকেল এর লিঙ্ক দিয়ে দেন। পপুলার পোস্টগুলোর লিস্ট করে সাইডবারে অথবা ফুটারে রেখে দিতে পারেন।

Bounce Rate

সাইটে ১০০ জন ভিজিটর যদি আসে এবং তার মধ্যে যদি ৭০ জনই যেই পেজে ল্যান্ড করে সেখান থেকে ওই ট্যাবটা ক্লোজ করে দেয় অথবা অন্য কোন সাইটে চলে যায়, তাহলে ওই সাইটের বাউন্স রেট হবে ৭০%। বাউন্স রেট বেশি হওয়া মানুষ আপনার ওই পেজটা অথবা ওই সাইটটা মানুষজন তেমন একটা পছন্দ করছে না। অথবা আপনার লিখে তেমন একটা ইন্টারেস্টিং না। অথবা আপনার সাইটের ফন্ট ঠিকঠাক পড়া যাচ্ছে না, অনেক ছোট অথবা পেজটা রিডেবল না, দেখতেও তেমন একটা সুন্দর না। Bounce Rate সরাসরি সাইটের UI & UX & Content Quality এর সাথে সম্পর্কিত। গুগল যদি দেখে আপনার সাইটে বাউন্স রেট বেশি, তাহলে নেক্সট টাইম ওই কিওয়ার্ডে আপনার সাইটে ট্রাফিক পাঠাবে না (মানে আপনি র‍্যাঙ্কে থাকবেন না)।

টিপসঃ পেজ লোডিং টাইম কমিয়ে ফেলুন। আর্টিকেলের শুরুর দিকে গদবাধা কথা না লিখে ইন্টারেস্টিং কিছু লিখুন। সাইটে সার্চ বক্স এড করুন এবং সুন্দর ফন্ট ইউজ করুন ( অবশ্যই ফন্ট যাতে 15px এর বেশি বড় হয়)।

Total Referring Domains

 আপনি ঠিক কয় হাজার ব্যাক্লিঙ্ক পেয়েছেন, সেটার চেয়ে গুরুত্বপুর্ন হচ্ছে আপনি ঠিক কত হাজার ডোমেইন থেকে ব্যাক্লিঙ্ক পেয়েছেন। উদাহরণ দিচ্ছি। ধরুন আপনি nshamim.com এর ৫ টি পেজ থেকে ৫ টি ব্যাকলিঙ্ক পেয়েছেন। এবং latenightbirds.com এর ২ টি পেজ থেকে ২ টি ব্যাকলিঙ্ক পেয়েছেন। তার মানে, আপনার মোট ব্যাকলিঙ্কের সংখ্যা হচ্ছে ৭ টি। কিন্তু রেফারিং ডোমেইন হচ্ছে ২ টি। পাশাপাশি, আপনার যে মেইন কম্পিটিটর, তারও মোট ব্যাক্লিঙ্কের সংখ্যা ৭ টি, কিন্তু সে ওই ৭ টি ব্যাক্লিঙ্ক পেয়েছে ৭ টি আলাদা আলাদা ডোমেইন থেকে। তাহলে গুগল কাকে র‍্যাঙ্ক করবে বলে আপনার মনে হয়? অবশ্যই Total Referring Domains যার বেশি, সেই র‍্যাঙ্কে থাকবে। এবং ঠিক এটাই SEMRush তাদের রিসার্চে খুঁজে পেয়েছে।

এর পিছনে গুগলের লজিক কি? কারণ গুগলের রোবট তো ব্যকলিঙ্ককে দেখে আপভোট হিসেবে। আপনার সাইট আমার সাইট থেকে একটা লিঙ্ক পেয়েছে মানে একটা ভোট পেয়েছে এই বলে যে আপনার সাইটার গুন, মান চরিত্র ভালো। কিন্তু আমি তো আপনার সাইটকে ৫ বার বলতে পারি না যে, আপনার সাইট ভালো , তাকে ভোট দিলাম, ভোট দিলাম এবং ভোট দিলাম। একজন একটা ভোটই দিতে পারে। বাকি সব বোনাস। কিন্তু আসল ভোটের মতো গুরুত্বপুর্ন নয়।

টিপসঃ একটা ওয়েবসাইট থেকে ১টা লিঙ্ক নিয়ে আসতে পারলে ওই সাইটের কথা ভুলে যান। নতুন কোন সাইট থেকে ব্যাকলিঙ্ক আনার জন্যে চেষ্টা করুন। কারণ আপনি তো এখন জেনে গেছেন যে, একটা সাইট থেকে বার বার লিঙ্ক নিয়ে আসলে আপনার জন্যে সেটা খুব বেশি লাভজনক কিছু হবে না। 🙂

Keyword in Title tag :

টাইটেল ট্যাগ এ কীওয়ার্ড দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ রাঙ্কিং ফ্যাক্টর কনটেন্ট এর জন্য। ইহা স্ট্রং অন পেজ এসইও সিগন্যাল হিসেবে দেখা হয়ে থাকে।

Title Tag Starts with a Keyword:

টাইটেল ট্যাগ আপনার ফোকাস কীওয়ার্ড প্রথমে থাকতে হবে। এটি শেষে থাকার চাইতে বেশি কাজে দেয়।

Keyword in Description Tag:

আপনার মেটা ডেসক্রিপশন এ কীওয়ার্ড রাখতে হবে। এটিও একটি রাংকিং ফ্যাক্টর হিসেবে পরিগণিত হয়ে থাকে।

Keyword Appears in H1 Tag:

কীওয়ার্ড H1 ট্যাগে থাকলে এইটা গুগলের কাছে আরো একটি রেলেভ্যান্সি সিগন্যাল দিয়ে থাকে।

Page Loading Speed via HTML:

পেজ লোডিং স্পিড গুগল রাঙ্কিং ফ্যাক্টর গুলোর মধ্যে অন্যতম রাঙ্কিং ফ্যাক্টর। গুগল আপনার পেজ স্পিড খুব সহজেই বুজতে পারে। তাই পেজ স্পিড আপনি অবশ্যই সমস্যা থাকলে সমাধান করে নিবেন।

SEMrush এর রিসার্চ করা বাকি গুগল সার্চ ইঞ্জিন র‍্যাঙ্কিং ফ্যাক্টরগুলো বাংলায় আমি ডিটেইল ভিডিও দিয়েছি NShamimPRO তে। নিয়মিত এই ধরনের ভালো কিছু জানতে, পড়তে এবং শিখতে জয়েন করে ফেলুন NShamimPRO প্রিমিয়াম এসইও কোর্সে।

ভালো থাকবেন সবাই।

অনেক অনেক ভালো। 🙂

নাসির উদ্দিন শামীম
আপনার ইমেইলে বাংলায় ইন্টারনেট মার্কেটিং এবং এসইও রিলেটেড লেটেস্ট খবর ও আপডেট পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করে রাখুন।

Leave a Comment

Share via
Copy link
Powered by Social Snap