কিভাবে আপনার পুরাতন কনটেন্ট আপডেট করবেন ?

১) ডেটা সংগ্রহ করুন

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আপনার কোন পোস্ট অপ্টিমাইজ করা উচিত? যদি তত্ত্বগতভাবে, বলি তাহলে সবগুলোই। যাইহোক, এইটা তো পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারছেন কোথা থেকে শুরু করতে হবে। আশা করি, আপনি বিভিন্ন মেট্রিকস ট্র্যাক করছেন যা আপনাকে কনটেন্ট আপডেট এ সাহায্য করতে পারে।

প্রথমত আপনার Google অ্যানালিটিক্সে লগইন করেন। গুগল এনালিটিক্স এর মধ্যে আপনি Behavior > Site Content > All Pages অধীনে আপনি আপনার সাইটের সবচেয়ে জনপ্রিয় পেজ খুঁজে বের করতে পারবেন।
যারা গুগল এনালিটিক্স ব্যবহার করছেন না তারা গুগল সার্চ কনসোল থেকে পারফরম্যান্স এ ক্লিক করবেন তারপর নিচে পেজ এ ক্লিক এ ক্লিক করবেন তারপর অ্যাভারেজ পসিশন  এ ক্লিক করলে আপনি আপনার পেজ পসিশন পেয়ে যাবেন। 

২) সঠিক পেজ খুঁজে বের করুন 

যখন আপনি সব তথ্য এক জায়গায় করতে পারবেন তখনি সময় পরবর্তী এনালাইসিস এ যাওয়া। এইখানে কিছু পেজ এর ধরণ দেখা হবে; 
১) হাই-ট্রাফিক কিন্তু লো-কনভার্সন 
এই টাইপ এর পেজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই পেজ অপ্টিমাইজ করলে আপনি কনভার্সন পেতে পারেন। 
২) লো-ট্রাফিক কিন্তু হাই-কনভার্সন 
এই রকম পোস্ট গুলা অপ্টিমাইজ করার ফলে আপনি ট্রাফিক বাড়ালে কনভার্সন আরো বেড়ে যাবে। 
৩) পুরাতন কোনো পপুলার পোস্ট 
এই টাইপ এর কনটেন্ট গুলা হতে আপনি লিংক অর্জন করেছেন বা সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রচুর শেয়ার হয়েছে ও ভালো পরিমান ট্রাফিক ছিল কিন্তু এখন আগের মতন নেই। 

এইভাবে আপনার কনটেন্ট দেখলে আপনি অপটিমাইজেশনের জন্য কিছু সম্ভাব্য কনটেন্ট চিহ্নিত করতে পারবেন। শুরুতে, ১০-৩০ টি পোস্ট/কনটেন্ট বাছাই যথেষ্ট। আপনি পরবর্তীতে পরে আরো কিছু করতে পারেন.
এরপর, পুরাতন কনটেন্ট হালনাগাদ করার জন্য নিম্নলিখিত এক বা একাধিক কৌশল প্রয়োগ করতে পারেন; 

৩) আপনার কীওয়ার্ড রিসার্চ আপডেট করুন

কীওয়ার্ড রিসার্চ SEO’র জন্য গুরুত্বপূর্ণ কৌশল। আপনি যে কীওয়ার্ড নিয়ে কাজ শুরু করেছেন তা হতে পারে অনেক ভালো কীওয়ার্ড ও সার্চ ভলিউম ভালো ছিল  কিন্তু বারো মাস পর জনপ্রিয় একটি কীওয়ার্ড  আজ একই পরিমাণ সার্চ ভলিউম নাও পেতে পারে। অতএব, আপনার কনটেন্ট এর মাঝে মাঝে পুনরায় অপ্টিমাইজ করা গুরুত্বপূর্ণ।

আপনার কীওয়ার্ড কৌশল হালনাগাদ করা আপনাকে আপনার কনটেন্ট এ অতিরিক্ত কীওয়ার্ড অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ দেয়। সম্ভবত যখন কনটেন্টটি  পাবলিশ করা হয়েছিল, তখন হয়তো আপনি কিছু সেকেন্ডারি/ LSI  কীওয়ার্ড ব্যবহারের সুযোগ মিস করেন। এখন আপডেট করার সময় সেইগুলা ব্যবহার করবেন।

আপনার কনটেন্ট এর  জন্য কিভাবে নতুন কীওয়ার্ড খুঁজে বের করবেন তা এখানে দেওয়া হল:

১) Google সার্চ কনসোলের মধ্যে পারফরমেন্স এ  যান
২) যেই কনটেন্ট টি আপডেট করতে চাচ্ছেন ঐ ইউআরএল এর উপর ক্লিক করেন।  
৩) পসিশন এ ক্লিক করেন। 
৪) নিচে quary তে ক্লিক করেন। 
৫) তারপর আপনি পসিশন এর ফিল্টার করতে পারেন বা ক্লিক বা ইম্প্রেশন এর ফিল্টার করতে পারবেন। 

বিকল্পপদ্ধতিতে আপনি যেই পেজ/পোস্টকে অপ্টিমাইজ করবেন তা আপনি কীওয়ার্ড প্ল্যানার অথবা Frase এ দিলে আপনাকে কিছু কীওয়ার্ড এর সাজেশন করবে। এই ক্ষেত্রে লং-টেইল কীওয়ার্ড সাজেশন হলে ভালো। 

৪) সার্চ ইনটেন্ট এনালাইসিস করুন 

লো-কম্পিটেটিভ কীওয়ার্ড সনাক্ত করার পাশাপাশি, আপনাকে সার্চ ইনটেন্টও  বুঝতে হবে। Google কিভাবে কনটেন্ট রাঙ্ক করে এটি আসল বিষয়। 

সংক্ষেপে, সার্চ ইনটেন্ট ব্যবহারকারীর সার্চ query কারণ। তো, যখন একজন ব্যবহারকারী একটি নির্দিষ্ট কীওয়ার্ড টাইপ করে, তারা আসলে কি চায়? তারা কি কিছু কিনতে চায়? তারা কি শুধু তথ্য খুঁজছে? এটি উপলব্ধি আপনাকে তাদের সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক কনটেন্ট তৈরি করতে সহায়তা করবে।

অতএব, শুধু কীওয়ার্ডের দিকে তাকাবেন না, নিজেকে জিজ্ঞেস করুন যে ইউসার সার্চ ইঞ্জিনে প্রবেশ করে সে আসলে কি চায়।

৫) পোস্ট টাইটেল উন্নত করুন

পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে যে ৮০ শতাংশ মানুষ পোস্ট এর  টাইটেল পড়বে কিন্তু মাত্র ২০ শতাংশ আপনার বাকি কনটেন্ট পড়বে। অতএব, আপনার পুরানো পোস্টের টাইটেল উন্নত করা নতুন পাঠকদের আকৃষ্ট করার একটি ভাল উপায়।

৬) কনটেন্ট আপডেট করুন 

আমরা এখন কনটেন্ট অংশে এসেছি – আসল কনটেন্ট আপডেট করা । আপনি কনটেন্ট এর কিছু অংশ বা অনেক খানি পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকলে, এখানে কি কি চেক করতে হবে তা নিচে দেয়া হলো:

সঠিক তথ্য – আপনার অন্তর্ভুক্ত করা যে কোন সার্চ বা পরিসংখ্যানের প্রতি মনোযোগ দিন। আপনি সর্বশেষ পোস্ট করার পর থেকে এটি আপডেট করা হয়েছে কিনা এবং নতুন রিসার্চ বা তথ্য প্রকাশিত হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করুন। এটি আপনাকে আপনার কনটেন্টের বিষয়বস্ত আরও ব্যাপক করে তুলে ধরতে পারবে।

ব্রোকেন লিংক – আপনি যখন কনটেন্ট আপডেট করবেন তখন আপনি আপনার এক্সিস্টিং লিংক গুলার দিকে লক্ষ্য করুন।  লিংক গুলা ঠিক আছে কিনা ? আপনি ব্রোকেন লিংক চেকার দিয়ে একবার চেক করে নিবেন। কারণ ব্রোকেন লিংক এসইও-এর জন্য একটি খারাপ লক্ষণ।

ফ্রেশ ভিজ্যুয়াল – নিশ্চিত করুন যে আপনি আপনার কনটেন্ট  আপনার প্রতিদ্বন্দ্বীদের থেকে ভালো ছবি  অন্তর্ভুক্ত করুন। উপরন্তু, আপনি যদি কোন গ্রাফ বা অনুরূপ ভিজুয়াল তথ্য অন্তর্ভুক্ত করেন, এটি সর্বশেষ সংস্করণে আপডেট করুন. এছাড়াও, কিছু ছবি; জিফ বা ভিডিও দিয়ে কনটেন্ট এ রাখার কথা বিবেচনা করুন।

ব্যাকরণ, বানান, লেখা – পাবলিশড করা কয়েক বছর আগের আপনি আপনার কনটেন্ট পড়েন, তখন আপনার কিছুটা বিব্রত বোধ করা হতে পারে। তার মানে আপনি এখন আগের চেয়ে ভালো মানের কনটেন্ট দিতে পারেন। আপনার কনটেন্ট আপডেট করার কারণে ব্যাকরণ, বানান, বিন্যাস, এবং অন্যান্য জিনিষের জন্য আপনার দক্ষতা উন্নয়ন ঘটে যার ফলে কনটেন্টটি নিখুঁত হয়ে থাকে। 

ইন্টারলিংক – যেহেতু আপনি আগেও অনেক কনটেন্ট দিয়েছেন, সম্ভবত বেশ কিছু নতুন পোস্ট প্রকাশ করেছেন। এখন সময় হয়েছে আপনার পুরানো কনটেন্ট থেকে নতুন কনটেন্ট এর সাথে লিঙ্ক করার। তবে ইন্ট্রার লিংক অবশ্যই উপযুক্ত হতে হবে। এটি আপনার সাইটের কাঠামো উন্নত করবে।

যাই হোক, আপনি যদি নিশ্চিত না হন যে কি উন্নতি করতে হবে, তাহলে SERP এ  আপনার প্রতিযোগিতার দিকে তাকান এবং দেখুন তারা কি করছে। তাহলে তাদের কনটেন্ট দেখে আপনি একটি ধারণা পাবে। 

৭) আপনার অন-পেজ SEO মনে রাখবেন

অন-পেজ এসইও আপনার সাইটে স্বতন্ত্র পেজ অপ্টিমাইজ করা, হাই-রাঙ্কিং এবং আরো টার্গেটেড ট্রাফিক আনতে সাহায্য করে। পুরাতন কনটেন্ট  অপ্টিমাইজ করার সময় অবশ্যই আপনাকে অন-পেজ এসইও তা দেখতে হবে।   
যে যে বিষয় দেখতে হবে তা নিচে দেয়া হলো;  

১) টাইটেল, ইউআরএল, মেটা ডেসক্রিপশন, এবং হেডিং এ  মেইন কীওয়ার্ড রাখতে হবে। 
২) আপনার H2 এবং H3 টাইটেল এ LSI কীওয়ার্ড রাখবেন। 
৩) ইন্টারনাল ও এক্সটার্নাল লিংক  প্রাসঙ্গিক এবং আপডেটেড হতে হবে। 
৪) ইমেজ অপ্টিমাইজ হতে হবে। 

৮) কমেন্ট বাছাই করুন

আপনার কন্টেন এর আপডেট করার চূড়ান্ত ধাপ হচ্ছে কমেন্ট সেকশন দেখা। সময়ের সাথে সাথে, আপনি হয়তো অনেক কমেন্ট জমা হয়েছে, এবং সবগুলো কনটেন্ট এর সাথে সহায়ক নয়।
হয়তো কিছু স্প্যাম আছে, হয়তো কিছু মন্তব্য বিষয়ভিত্তিকভাবে সম্পর্কিত নয়, এই সব কমেন্ট কোনো রকম ভ্যালু অ্যাড করে না। 

এই সব ক্ষেত্রে, সেগুলি মুছে ফেলার কথা বিবেচনা করুন। এইভাবে, যখন নতুন ভিজিটর আসবে, কমেন্ট সেকশন তাদের জন্য বাকি পোস্টের মতই সহায়ক হবে।

৯) পোস্টের তারিখ আপডেট করুন

পরিশেষে, পরিবর্তিত কনটেন্টটির তারিখ আপডেট করুন। যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে, এটি ভিসিটরকে Google-এ আপনার পোস্টে ক্লিক করার জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। 

১০) আপনার আপডেটেড পোস্ট প্রমোট করুন

যখন আপনি একটি পোস্ট হালনাগাদ করেছেন, আপনার কাজ এখনো শেষ হয়নি। নতুন ব্লগ পোস্টের মত, আপনাকে এটা প্রমোট করতে হবে।

প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে গুগলকে এটি পুনরায় ক্রল করতে বলা। তার জন্য আপনাকে আপডেট পোস্টটি বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করতে হবে যাতে গুগল দ্রুত আপনার পোস্টটি ইনডেক্স করে নেয়। 

Yaqub Nipu
আপনার ইমেইলে বাংলায় ইন্টারনেট মার্কেটিং এবং এসইও রিলেটেড লেটেস্ট খবর ও আপডেট পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করে রাখুন।

Leave a Comment

Share via
Copy link
Powered by Social Snap