৯ টি ধাপে এসইও’তে ইমেজ অপ্টিমাইজেশন যেভাবে করতে পারেন

আপনার কনটেন্ট যাতে ব্যবহারকারীদের কাছে আকর্ষণীয় হয় তা নিশ্চিত করার জন্য ছবি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু এসইও-এর দিক থেকেও  ইমেজ অপ্টিমাইজেশন সমান গুরুত্ব আছে।

প্রথমত, ইমেজ সার্চ ইঞ্জিনকে গুরুত্বপূর্ণ প্রাসঙ্গিক তথ্য দেয়। দ্বিতীয়ত, অপটিমাইজড ইমেজ পেজ লোডিং গতি বাড়ায়, যা ব্যবহারকারীর এনগেজমেন্ট এবং সার্চ ইঞ্জিন রাঙ্কিং বৃদ্ধি করে। 

ইমেজ অপ্টিমাইজেশন কি?

ইমেজ অপটিমাইজেশন ব্যবহারকারীর সম্পৃক্ততা বৃদ্ধির জন্য ইমেজ এর সঠিক ফরমেট , আকার, এবং রেজোলিউশনে উচ্চ মানের ছবি তৈরি এবং সরবরাহ করার প্রক্রিয়া। যাতে সার্চ ইঞ্জিন ক্রলার সেগুলি পড়তে পারে এবং পেজ এর প্রেক্ষাপট বুঝতে পারে তার জন্য ছবি সঠিকভাবে লেবেল করা। 

এইচটিটিপি আর্কাইভ অনুসারে, ২০১৮ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত মোট ওয়েব পেজের ওয়েইট গড়ে ২১ শতাংশ ছবি তৈরি করা হয়েছে। কারণ ছবি একটি ওয়েবসাইটের অন্য যে কোন অংশের চেয়ে বেশী বাইট প্রয়োজন হয়, তাদের আকার এবং জটিলতা সাইটের কার্যক্ষমতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে।

আপনি যদি মানের সাথে আপোষ না করে ছবির আকার হ্রাস করেন, তাহলে পেজ লোড সময় উন্নত হয় এবং পরবর্তীতে, ওয়েবসাইট ইউসার এক্সপেরিয়েন্স বৃদ্ধি পায়। 

১) ইমেজ রি-সাইজ করুন

ছবির আকার এবং ফাইলের আকার একই জিনিস নয়। ছবির আকার একটি ছবির ডাইমেনশনকে বোঝায় (উদাহরণস্বরূপ, ১০২৪ বাই ৬৮০ পিক্সেল)। ফাইল আকার সার্ভারে স্টোর করার জন্য প্রয়োজনীয় স্থানের পরিমাণকে বুঝানো হয়। (উদাহরণস্বরূপ, 350 কিলোবাইট)।
হাই-রেসুলেশন এবং বড় ডাইমেনশন পেজ লোড টাইম কমিয়ে দেয়। আপনাকে ফাইল সাইজ এমনভাবে কমিয়ে আনতে হবে যাতে ইমেজ এর কোয়ালিটিতে এমন একটা সমস্যা না হয়। 

সঠিক ফাইল ফরমেট ব্যবহার করুন

PNG, JPEG, and GIF সবগুলাই পপুলার ইমেজ ফরমেট। প্রতিটার আলাদা সুবিধা আছে। আমি আপনাদের JPEG ফরমেটটাই রেকমেন্ড করবো যদি ঐ ইমেজ এ অনেক কালারফুল হয়ে থাকে তাছাড়া সিম্পল ইম্যাগ এর ক্ষেত্রে PNG ফরমেট ব্যবহার করতে পারেন।   

সঠিক কম্প্রেশন রেট নিধারণ করুন

আপনি যদি ইমেজ কমপ্রেস খুব বেশি করে ফেলেন তবে আপনার ইমেজ এর ফাইল সাইজ ছোট হয়ে গেলেও ইমেজ কোয়ালিটি খারাপ হয়ে যাবে। অন্যদিকে আপনি ইমেজ কমপ্রেস কম করলে বা না করলে ইমেজ কোয়ালিটি ভালো হলেও ফাইল সাইজ অনেক বড় হয়ে যাবে। 
এই সমস্যা থেকে পরিত্রানের জন্য আপনি ইমেজ অপ্টিমাইজেশন টুলস ব্যবহার করতে পারেন ও সাথে কিছু ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন আছে যেইগুলা দিয়ে আপনি ইমেজ কমপ্রেস  এ কাজে দিবে। তাহলে চলুন ইমেজ অপ্টিমাইজেশন টুলস কি কি আছে জেনে নেই; 

Affinity Photo
Pixlr (JPEG optimization)
ImageOptim (Mac only)
Kraken (bulk compression)
Gimp
Paint.NET
JPEG Mini
OptiPNG
FileOptimizer
Trimage
Photoshop 

ইমেজ অপ্টিমাইজেশন এর জন্য ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিনসমূহ

ShortPixel
EWWW Image Optimizer
WP Smush
TinyPNG
ImageRecycle
Optimus Image Optimizer

সাইট স্পিড টেস্ট করুন

আপনি ইমেজ অপ্টিমাইজ করার পর আপনার ওয়েবসাইট লোডিং পেজটা একটু চেক করে দেখতে পারেন; তার জন্য আপনি নিচের টুলস গুলা ব্যবহার করতে পারেন;    
WebPageTest
Pingdom
GTmetrix
WebWait
Google PageSpeed Insights

2. ইমেজ ফাইল এর নাম অপ্টিমাইজ করুন

কোনো ইমেজ আপলোড করার আগে ইমেজ এর রিলেভেন্ট নাম দেন যাতে সেই নামের মধ্যে আপনার কীওয়ার্ডটা থাকে যেটা ইমেজ রাঙ্কিং ও এসইও’র জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।     

৩. অল্ট ট্যাগ ব্যবহার করুন

ভিসিটর ইমেজ দেখেই বুঝবে ইমেজ তা কেন দিয়েছেন বা এইটার গুরুত্ব কতখানি কিন্তু সার্চ ইঞ্জিন বট html দেখে  বুঝে নেয় ইমেজটা কিসের। বট বুঝার জন্য অল্ট ট্যাগ অনেক বেশি প্রয়োজন। এমনকি যখন কোন সমস্যার কারণে ছবি লোড হচ্ছে না, তখনও সার্চ ইঞ্জিন একটি পেজ রাঙ্ক করানোর জন্য Alt tag বুঝতে পারে। দৃশ্যমানতা বাড়াতে ব্র্যান্ড-প্রাসঙ্গিক শব্দ এখানে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। শুধু কীওয়ার্ড স্টাফিং এড়িয়ে চলুন।

৪. ইমেজ টাইটেল অপ্টিমাইজ করুন

আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করেন, ইমেজ টাইটেল সাধারণত ফাইলের নাম থেকে নেওয়া হয় যাতে আপনি কখনও কখনও এটি যেমন আছে ঠিক একই নাম দিতে পারেন। আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার না করেন তবে আপনি ফাইলের নামের মধ্যে যথাযথ কীওয়ার্ড দিয়ে এটিকে পুনঃনামকরণ/রি-নেম করুন।

যদিও SEO জন্য ইমেজ টাইটেল খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ নয় তবে ব্যবহারকারীর এনগেজমেন্টের দিক থেকে ইমেজ টাইটেল সহায়ক ভূমিকা পালন করে। 

5. ক্যাপশন যুক্ত করুন

ইমেজ টাইটেল ও ইমেজ অল্ট ট্যাগ এর মতন ইমেজ এ ক্যাপশন যদিও এসইও তে তেমন কোনো গুরুত্ব নাই তবে এইটা যেহেতু ওয়েবপেজ এ দৃশ্যমান হয়ে থাকে তাই ইউসার এক্সপেরিন্স এ কিছুটা প্রভাব ফেলে। 

6. ইউনিক ইমেজ ব্যবহার করুন

স্টক ফটো ব্যবহার করলে সমস্যা নাই , কিন্তু এই ইমেজ গুলো  আপনার সার্চ ইঞ্জিনে রাঙ্কিং এ তেমন কোনো সাহায্য করবে না, যেহেতু অন্যান্য ওয়েবসাইট প্রায়ই একই ছবি ব্যবহার করে। একইভাবে আপনি ওয়েবসাইট এ ইউনিক কনটেন্ট দিলে যেমন সার্চ ইঞ্জিন রাঙ্ক এ সহায়তা করে তেমনিভাবে ইউনিক ইমেজ আপলোড করা SEO জন্য ভাল। 

7. কনটেন্ট এবং ইমেজ এর রেলেভেন্সি যেন থাকে

ওয়েবসাইট এর কনটেন্ট সার্চ ইঞ্জিনকে আপনার ইমেজের প্রাসঙ্গিকতা নির্ধারণ করতে সহায়তা করতে পারে। যদি আপনার কনটেন্ট এর সাথে ইমেজ প্রাসঙ্গিক না হয় তবে প্রাসঙ্গিক ইমেজ ব্যবহার করুন। ইনফোগ্রাফিক বা চার্ট টাইপ হলে ছবিটি বর্ণনা করুন

৮) স্ট্রাকচার ডাটা যুক্ত করুন

স্ট্রাকচার ডাটা ব্যবহার করলে গুগল আপনার ইমেজকে রিচ রেজাল্টস এ দেখায়। কারণ সার্চ ইঞ্জিন স্ট্রাকচার ডাটার মাধ্যমে ইমেজকে ভালো করে পড়তে পারে। 
গুগল ইমেজ প্রোডাক্ট ইমেজ, ভিডিও ও রেসিপির ক্ষেত্রে স্ট্রাকচার ডাটা সাপোর্ট করে।  উদাহরণস্বরূপ, আপনার সাইটে যদি রেসিপি থাকে এবং আপনি আপনার ছবিতে স্ট্রাকচার ডাটা যোগ করেন, Google আপনার ছবিতে একটি ব্যাজ যোগ করতে পারে যে এটি একটি রেসিপির অন্তর্গত। 

9. সাইটম্যাপ ব্যবহার করুন

সাইট ম্যাপ SEO এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ কারণ তারা আপনার সাইটের সকল পেজ সম্পর্কে সার্চ ইঞ্জিনকে জানায়। সার্চ ইঞ্জিন ক্রলারপ্রতিটি ছবি খেয়াল করে – একটি ইনফোগ্রাফিক, মীম, ফটো, ভিডিও থাম্বনেইল ইত্যাদি – সেগুলি আপনার সাইটম্যাপে অন্তর্ভুক্ত করুন।

যদি আপনার ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেসে হোস্ট করা হয়, আপনি Yoast SEO/ Rankmath ব্যবহার করতে পারেন, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি সাইট ম্যাপ আপনার ভিজুয়াল কনটেন্ট যুক্ত করবে। তার জন্য আলাদা করে ইমেজের সাইটম্যাপ করা লাগে না।

Yaqub Nipu
আপনার ইমেইলে বাংলায় ইন্টারনেট মার্কেটিং এবং এসইও রিলেটেড লেটেস্ট খবর ও আপডেট পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করে রাখুন।

Leave a Comment

Share via
Copy link
Powered by Social Snap